1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

হাইকোর্টে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশী পরিবার

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১
  • ৩২২ Time View

এয়ারপোর্ট এলাকার সরকার নির্ধারিত হোটেলগুলো রীতিমত চাঁদাবাজি করছে: অভিযোগ ভুক্তভোগীদের

প্রত্যয় লন্ডন ডেস্ক : দেশ থেকে ফেরার পরে হোটেল কোয়ারেন্টিনে অস্বাস্থ্যকর ও আবদ্ধ পরিবেশে রাখার জন্য বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি দুটি পরিবার ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এই দুটি মুসলমান পরিবারকে ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী যথাযথ খাবার দাবার না দেয়া, হোটেলে অপরিস্কার বিছানায় শোতে বাধ্য করা এবং মুক্ত বাতাস থেকে বঞ্চিত রাখা তাদের প্রতি সম্ভাব্য মানবাধিকার লঙ্গনের সামিল এমন অভিযোগ এনেছেন তাদের আইনজীবি।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি বাংলাদেশ ও পাকিস্তান লাল তালিকাভুক্ত হয়েছে এবং এসব দেশ থেকে যারা ব্রিটেনে আসবেন তাদেরকে বাধ্যতামুলকভাবে করোনা ভাইরাস টেষ্ট সহ হোটেল কোয়ারান্টিনে থাকার নিয়ম চালু করা হয়েছে। গত সোমবার লাল তালিকাভূক্ত করা হয়েছে ভারতকে। ২৪ এপ্রিল থেকে  ভারতীয় নাগরিকদেরও ঢুকতে দেয়া হবে না। তাই, ২৪ এপ্রিলর আগেই ভারত থেকে ব্রিটেনে ফিরতে বিশেষ ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিলেও অনুমতি দেয়নি হিথরো এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ। এটা নিয়ে চলছে দেন-দরবার।

নিয়ম অনুযায়ি ব্রিটিশ নাগরিক ও যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদেরকে এদেশের ঢোকার পর সরকার অনুমোদিত হোটেলে নিজ খরচে ১০ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়। এজন্যে তাদের হাজার পাউন্ড ব্যয় করতে হয়।

বুধবার ডেইলি ইন্ডিপেন্ডেন্টের এক এক্সক্লুসিভ রিপোর্টে বলা হয়, কোয়ারেন্টিনের জন্য নির্ধারিত একটি হোটেলে নিম্ন মানের সেবা এবং খাবারের পানির জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা, অনুপযুক্ত খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। একটি পরিবার চারদিনের মধ্যে দুই বার হাইকোর্টে গেলে হিথরো এয়ারপোর্টের নিকটবর্তী হলিডে ইন হোটেলকে পরিস্থিতির উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হলেও তা অবজ্ঞা করা হয়েছে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে যুক্তরাজ্যে বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের জন্যকরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নিয়ম করা হয়েছে যে, যারা লাল তালিকাভুক্ত দেশ থেকে আসবেন তাদের ১০ দিন কোয়ারেন্টিন তালিকভুক্ত হোটেলে থাকতে হবে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির জন্য এবাবদ ১৭৫০ পাউন্ড ভাড়া দিতে হবে। যদি তার সাথে আরেকজন থাকেন অথবা ১২ উর্ধ ছেলেমেয়ে থাকে তাহলে অতিরিক্ত ৬৫০ পাউন্ড পরিশোধ করতে হবে। ১২ বছরের নিচের বয়সি শিশু থাকলে অতিরিক্ত ৩২৫ পাউন্ড ভাড়া দিতে হবে। এরমধ্যে কিছু হোটেল বাসিন্দা তাদের সাথে ‘মানুষের মতো ব্যবহার করা হচ্ছেনা’ বলে অভিযোগ করেছেন। তাদের আইনজীবিরা বলছেন এমন আচরণ অনেতিক ও নিন্দনীয় এবং অবশ্যই  বে আইনি। বিশেষ করে কোয়ারেন্টিন হোটেলে যে ভাড়া পরিশোধ করছেন তাকে তারা চাঁদাবাজির সাথে তুলনা করেছেন।

একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে হলিডে ইন এক্সপ্রেসে পাঁচ জনের একটি পরিবার ১০দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য উঠেন। তাদেরকে পাশাপাশি সংযুক্ত দুটি রুম দেয়া হয় যা একদম আবদ্ধ। রুমে একটি চেয়ার ও একটি টেবিল রয়েছে। কোর্টে দেয়া তাদের অভিযোগে জানা গেছে সেখানে রুমের জানালা খোলার কোন ব্যবস্থা নেই বাইরে ময়লা নেয়ারও কোন ব্যবস্থা নেই যা একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। ব্রিটিশ পাকিস্তানি এই পরিবার হোটেলের জন্য ৪০২৫ পাউন্ড পরিশোধ করেছে। তারা অভিযোগ করে তাদেরকে বেকন এবং পর্ক এর বাগার্র খেতে দেয়া হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে বের হওয়ার আগের দিন নাহিদা খান (৪৭) নামের এই মহিলা বলেন, এটি ছিল একটি দু:স্বপ্নের মতো। খাবার ছিল খুবই খারাপ, অরুচিকর, যা সম্পুর্ণ খাবারের অযোগ্য। পর্ক বাগার্র এবং পানিনি দেয়া হয় যা মুসলমান হিসাবে তারা খেতে পারেন না। তিনি জানান তাদের সন্তানেরা শুধু সেরিয়েল ও ক্রিস্প খেয়েছে।

নাহিদা খান বলেন, “যেহেতু আমাদের একটি চেয়ার ছিল তাই বিছানায় বসে খাবার খেতে হয়েছে এবং তা নোংরা হয়ে যায়। তিন চার দিন পর তাদের পরিস্কার বেডশিট নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে এবং বাধ্য হয়েই আমরা নোংরা বেডশিটে শুতে হয়েছে। আমার কিছু করার ছিলনা।”

তারা বাইরে ব্যায়ামের জন্য যেতেও পারছিলেন না, জানালা খোলা যায়না এবং একেবারে বন্দীর মতোই ছিলেন। তারা জানালা দিয়ে শুধু লবি দেখতে পেতেন। হোটেলে পৌছার পরে তাদের জানানো হয়েছিল, তারা কারপার্কে ব্যায়ামের জন্য হাঁটতে পারবেন। তাদের সাথে মানুষের মতো ব্যবহার করা হয়নি অভিযোগ করে বলেন, তাদের সন্তানেরা শুধ কেঁদেই সময় কাটিয়েছে।

পরিবারের আইনজীবি হাইকোর্টে মামলা করলে শুক্রবার কোর্ট সরকারকে নির্দেশ দেয় সোমবারের ভিতরে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণের। বিচারক লেইং নির্দেশ দেন “তারা সত্যিকারভাবে কোয়ারেন্টিনে অসুবিধা ভোগ করছেন, বিশেষ করে তাদের শিশুদের স্বাস্থ্য ও ভাল থাকার বিষয় নিয়ে। এবং মুসলমান হিসাবে তাদের খাবার দাবারের ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে নজর দেয়া অত্যন্ত জরুরী।

ইন্ডিপেন্ডেন্টের বিশেষ এই প্রতিবেদনে একটি বাংলাদেশি পরিবারের ভোগান্তির কথাও তুলে ধরা হয়। ব্রিটিশ বাংলাদেশি শফিউল আজম (৩৯) হিথরোর ক্রাউন প্লাজা হোটেলে ১৪ এপ্রিল থেকে তার নয় বছর ও ৭ বছরের দুই ছেলেকে নিয়ে কোয়ারেন্টিনে আছেন। তিনি তার স্ত্রী ও আরও দুই সন্তানকে বাংলাদেশে রেখে এসেছেন। একসঙ্গে ছয়জনের কোয়ারেন্টিন হোটেল ব্যয় তার পক্ষে বহন করা কঠিন বলে তিনি দুই ছেলেকে নিয়েই ফিরে আসেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, তাকে যে খেজুর খেতে দেয়া হয়েছে এতে পোকা ছিল।

শফিউল আজম জানান, তার ছেলেরা পৌঁছার পরে ক্ষুধার্ত ছিল এবং বলা সত্বেও প্রায় তিন ঘন্টা পরে তাদের রাত সাড়ে ন’টায় খাবার দেয়া ছিল যা ছিল খাবার অযোগ্য। পরের দিন তার ছেলের ডায়রিয়া হয়ে যায় এবং বমি করতে থাকে, যা কয়েকদিন স্থায়ী হয়। কিন্তু তাদের কোন মুক্ত বাতাস গ্রহণ করতে দেয়া হয়নি।

শফিউল আজম অভিযোগ করেন, রোজার দিনে তাকে রোজা ভাঙ্গার জন্য খেজুর দেয়া হয় এবং এতে তিনি পোকা রয়েছে দেখতে পান। তিনি বলেন, খাবার পানি পেতেও তাদের দেরি হয়। রাতের বেলা খুব ঠান্ডা থাকা সত্বেও তাদের হিটার কাজ করেনি বলে জানান শফিউল আজম।

শফিউল জানান, তিনি বিকাল ৫টায় তিন বোতল পানি চেয়েছিলেন যা পান রাত ১০টায়। এই ধরণের সার্ভিস কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি বলেন, “তারা প্রত্যেকবারই বলে তাদের ১৫০০ রুম রয়েছে এবং তারা খুব ব্যস্ত, কিন্তু পানির জন্য এতে সময় লাগার কথা নয়, পানি একটি সাধারণ চাহিদার ব্যাপার। এই কাজটুকু করতে না পারলে এসব হাতে নেয়ার কোন মানে নেই।”

তিনি বলেন, “আমি জানি এটি পাবলিক হেলথ এর ব্যাপার কিন্তু এই হোটেল ব্যবস্থাপনা একেবারে বিপর্যস্ত।”

জাহাব জামিল আশটন রোস ল-এর ব্যারিষ্টার ও পার্টনার যিনি দুই পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করছেন, জানান তারা ব্রিটিশ নাগরিকদের এবং বাসিন্দাদের কাছ থেকে অসংখ্য অভিযোগ পাচ্ছেন কোয়ারেন্টিন হোটেল গুলোর বিরুদ্ধে। এগুলো মধ্যে রয়েছে  ঠান্ডা এবং অনুপযুক্ত খাবার, হিটিং না থাকা এবং পরিষ্কার বেডশিট ও টাওয়াল না দেয়া।

তিনি বলেন, ব্রিটিশ ছেলেমেয়েদের জন্য যথাযথ খাবার, স্বাস্থকর পরিবেশের ব্যবস্থা করতে হেলথ সেক্রেটারী হাইকোর্টের আদেশ অবজ্ঞা করছেন যার কারণে কোর্ট আবারও সরকারকে সুষ্টু পরিবেশ ও খাবার দেয়ার জন্যে নির্দেশ দিয়েছে। এসব হোটেলের জন্য ইউকের নাগরিকদের অস্বাভাবিক অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে যা সাধারণ অবস্থায় অনেক সস্তায় পাওয়া যায়। এর উপরে এর অবস্থা এবং সেবার মানও অত্যন্ত খারাপ।

ইম্পেরিয়াম চেম্বারের ব্যারিষ্টার পল টাণার্র বলেন, মুসলমানদের রোজা ভাঙ্গতে পর্ক দেয়া বা পোকাযুক্ত খেজুর হোম অফিসের জন্য শুধু অনৈতিকই নয় বৈষম্যমুলকও বটে, যারা এই কোয়ারেন্টিন হোটেল এর ব্যবস্থা করার জন্য দায়ী।

সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, তারা চলতি কোন আইনি বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে পারবেন না। তবে তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো জনসাধারণের সুরক্ষা এবং যাতে যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাসের নতুন কোন ধরণ না আসে সে ব্যাপারে সরকারের শক্ত বডার্র নীতি বহাল রাখা।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল গ্রুপ এই দুই হোটেল গ্রুপের মালিক এবং তারা এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে নারাজ। কারণ হোটেল পছন্দ এবং কোয়ারেন্টিন এর বিষয় এর দায়িত্ব ডিপার্টমেন্ট ফর হেলথ এ্যান্ড সোশ্যাল কেয়ারের। তারা গেষ্টদের গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে কোন সুনির্দিষ্ট বুকিং নিয়েও মন্তব্য করতে পারে না।

আরও পড়ুন :ইসরায়েলে পরমাণু স্থাপনার কাছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..